LinkedIn

Saturday, 22 February 2025

রবি রায় ।। কবিতা সংকলন ।। মনের আঙ্গিনায়

বেশরম ইচ্ছে
রবি রায়

মাঝে মাঝে বেশরম ইচ্ছে জাগে মনে
কেউ আমার সকালের ঘুম ভাঙ্গাক এই বলে-
হ্যাঁগো, চা খাবে না,
অনেক যে বেলা হয়ে গেছে।
আমি ঘুম চোখে বলি-
আর একটু ঘুমিয়ে নিই, চোখ খুলতে পারছিনা।
তারপর ধড়ফড় করে উঠেই পড়ি-
সকাল সাড়ে সাতটার ট্রেনটা ধরতে না পারলে
অপিসের হাজিরাখাতায় লেট সাইন পড়বে,
তিনটে লাল টিকমার্ক মানে মাস ফুরালে একদিনের বেতন কাটা যাবে,
বাজারের থলিতে টান পড়বে।

এখন অবশ্য আর কোন ভুবনের ভার নেই, দায় নেই দায়িত্ব নেই,
সপ্তাহ শেষে বাজার যাওয়া বা রাতে ফেরার পথে বাজার করা নেই,
বাজারের কোন খবরও রাখিনা,
জানিনা কোন ট্রেন কখন এল কখন গেল,
তবুও ভোরের আলো ফুটলেই ঘুম ঘাঙে, কাউকে ডাকতে হয়না,
শীতকালেও ঠাণ্ডা জলে চোখমুখ ধুই,
আগের মত আর বাটিভরা ঈষৎ উষ্ণ জল রাখা থাকেনা,
নিজের চা নাজেই বানিয়ে খাই।

তবে আজও যেন অন্য এক ট্রেন ধরার আতঙ্ক তাড়া দেয়,
তাই ভোরে উঠেই বসে যাই ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতিচারণায়!
শুধু মাঝে মাঝে ভুল করে বেশরম ইচ্ছে জাগে মনে-
সকালের চায়ের কাপ হাতে নিয়ে কেউ যদি ভুল করেও ঘুম ভাঙাতে আসত আমায়!

👱

সময় ছিনিয়ে নিয়েছে জীবন,
বিফল হৃদয় হারিয়েছে মনন,
আজ শুধু ফেটে পড়ে
অসহায় আক্রোশ।
মনের মাঝে বয় অস্থিরতার ঝড়,
কখনোবা হয়ে উঠি উদ্গিরিত গিরি,
কখনোবা বুকে বাজে ক্রুদ্ধ গর্জন
পিঞ্জরে আবদ্ধ এক আহত কেশরীর,
কখনোবা রণসাজে রণক্ষেত্রে আছি,
কখনোবা রাজপথে মিছিলে সামিল।
মন মাতে কখনোবা উদাসী ভাবনায়-
সবকিছু পিছে ফেলে ভবঘুরে হই,
নিজেরে হারাই কোন অচিন পথে,
যে পথে রাখেনি পা কখনতো কেউ।
-রবি রায়

👱

কেউ কেউ তো আছেই এমন
যে তোমারে চায়,
সঙ্কোচেতে মলিন হৃদয়
সাহসভরে বলিতে নাহি পায়
-রবি রায়

👱
তোমাকে খুঁজেছি আমি
রবি রায়
---
তোমাকে খুঁজেছি কতদিন-
সভ্যতার সেই ঊষালগ্ন থেকে
শতসহস্র বর্ষ ব্যাপী
অবিরাম চলেছি আমি আঁকাবঁকা পথে
জীবনানন্দের সাথী হয়ে
তোমাকে খুঁজেছি আমি নাটোরের পথে,
বন্যায় ভেসেছি কতবার শেষের কবিতায়,
শ্রীকান্তের সঙ্গ নিয়ে
কাটিয়েছি কতদিন পিয়ারি সান্নিধ্যে
তোমাকে খুঁজেছি আমি মহাকবির কাব্যে,
কণ্বের তপোবনের খোঁজে
হারিয়েছি পথ কতদিন গহিন অরণ্যে,
পথশ্রমে ক্লান্ত হয়ে
কখনোবা বাল্মিকীর নিরালা আশ্রমে
নিয়েছি আশ্রয় আমি ক্ষণিকের তরে
নির্বাসিতা সীতা যেথা লব-কুশ লয়ে সাথে
প্রতীক্ষায় রত অযোধ্যা নৃপতির
কখনো বাজিয়ে বাঁশী সুরের আবেশে
খুঁজেছি তোমায় কোন দিবারাত্রির কাব্যে,
কল্পনায় ডানা মেলে
কখনোবা উড়ে গেছি নন্দনকাননে
বন্দিনী অপ্সরাদের মাঝে তোমারই সন্ধানে
তোমাকে খুঁজেছি আমি প্রাচীন বৈশালীতে
আম্রপালী নটিনীর হৃদয় কাননে
দেবদিন্ন হয়ে কখনো ডুবেছি আমি
তোমাকেই খুঁজে পেতে
সুতনুকা নাম দেবদাসীর অন্তরসলীলে
কখনোবা চলে গেছি ইতিহাসের পথ বেয়ে
প্রাচীন রোমের কোন নিভৃত কারাকক্ষে,
কাটিয়েছি সেথা কত নিদ্রাহীন রাত
তোমারই প্রতীক্ষায়
শৃঙ্খলিত স্পর্টাকাস হয়ে
তোমারই সান্নিধ্যলাভে
কখনোবা হয়েছি বিভোর হোমারের কাব্যে,
সেক্সপিয়রে বিচরণ করেছি কতদিন,
কল্পনায় মজনু হয়ে মজেছি লায়লায়,
বান্দা হয়ে মর্জিনার বনেছি দোসর
স্রোতস্বিনী নীলতীরে
যেন কোন পটে আঁকা প্রাচীন পুরীতে
হয়েছি মগ্ন কতদিন
আলো আঁধারিত অন্তঃপুরে
স্বপ্নের সুন্দরী সঙ্গমে
গ্রীক সেনাপতি বেশে
তোমারই সন্ধানে
তোমাকে খুঁজেছি আমি মুঘল হারেমে
অতৃপ্ত আরবী উর্বসীদের মাঝে,
কখনোবা তাজমহলের গর্ভগৃহে
কবরে শায়িতা যেথা তাজ শাজাহান পাশে
---
নভেম্বর ০১, ২০২১
👨
হাত বাড়ালেই তোমায় পাব
এমন যদি হত,
কাছেই আছ, দূরে তবু
খাঁচার পাখির মতো।
👨
Perception 
Don't force the flower to bloom, friend, 

''জস তুজু জিস কি থি উস কো তো না পায়া হামনে

ইস বাহানে সে মাগার দেখ লি দুনিয়া হামনে''


''যাকে খুঁজেছিলাম তাকে পাইনি কোনদিন

তবে খুঁজতে খুঁজতে আমার বিশ্ব দেখা হয়ে গেছে।"

উৎসর্গ: 
হারানো স্বপ্নগুলো ফিরে এসে কড়া নাড়ে অবিরত মনের দুয়ারে আমার।-রবি
লেখক পরিচিতি: যৌবনের শুরু
দিন বদলের স্বপ্ন নিয়ে।
গ্রামনগরের ঘরে ঘরে
অবস্থান করেছেন একদা।
এখন আশাহত, তবুও বাঁচেন স্বপ্ন নিয়েই।
বারংবার প্রেমে পরাভূত।
শিক্ষা পৃথিবীর পাঠশালায়।
ঠকতে ভালবাসেন, জীবনভর ঠকেছেনও।
আইকন ফুলনদেবী,
দ্য ফেমাস ব্যানডিট কুইন অফ ইন্ডিয়া।



যদিও রাত্রি
👨
২০.০৯.২০২২
👨
ইচ্ছে হয়

রবি রায়
আজ নিজের খাবার পরের সাথে
আজ ঘর হারাদের পাশে দাঁড়িয়ে
আজ কলম হাতে ঝর্ণাধারায়
আজ কন্ঠ ছেড়ে বেসুর তালে
আজ ছোটকালের স্মৃতি যত
২৯/০৭/২০২১

In a rainy wet day
Rabi Roy
Today is the day
to stand on the porch of a two-story building and watch the rain,
Today is the day
to stand at the crossroads with an umbrella over the head,
Today is the day
of the reunion with the loved one on the bank of the river.
 
Today is the day
to rush to the metropolis to join the procession,
Today is the day
to share the food with the next one on the same plate,
Today is the day
to stand by the homeless and see the world through their eyes.
 
Today is the day
to smile and write down the burns of life in a moody mood,
Today is the day
to write a poem with a fountain pen in hand,
Today is the day
to sing the favorite song and faint to the tune without control.
 
Today is a day
of reminiscence as a childhood memory,
Today is the day
to say goodbye to all having distributed all the books-
my lifelong friends so far,
Today is the day
to tell all- let you all be well.
29/07/2021



যেতে যেতে একলা পথে 
খানিক থামতে মন চায়,
দিনের বেলায় রাতের আঁধার 
থামতে নাহি দেয়।
-রবি রায় 
👤

পথের কাব্য
-রবি রায়-

রোজ সকালে তোমায় দেখি,
এক সারিতেই দাঁড়িয়ে থাকি,
এক যানেতেই যাই দুজনে
বাঁচার সন্ধানে।
পথের মাঝে প্রতিদিনই
উধাও আমায় ফেলে,
কাল সকালে দেখা হবে
জানিয়ে অবহেলে।
ক্লান্ত দেহে দিনের শেষে
ফিরি যখন রোজ,
দৃষ্টি মেলে অবিরত
তোমায় করি খোঁজ।
নিঝুম রাতে ঘুমের ঘোরে
তোমায় পড়ে মনে,
দূরে কোথাও যখন তুমি
আপনজনের সনে।
রাত পোহালে সকাল হলে
থাকি প্রতীক্ষায়,
দেখা কখন পাব তোমার
পথের কিনারায়।
বেলা আমার বয়ে গেছে
তবুও মনে হয়
ভোরের আলো পড়ল বুঝি
মনের আঙ্গিনায়।
দেখে দেখে তোমায় কেমন
নেশায় বিবশ হই,
ইচ্ছে করে সারাটা দিন
তোমার সাথেই রই।
কী নাম তোমার,
জানি না তো কেমন তুমি মেয়ে,
জানি শুধু তোমার চোখে
কাব্য আছে ছেয়ে।
মুখে তোমার দেখি আমি
ইতিহাসের ছবি,
তোমার কথা ভেবেই বুঝি
আঁকেন গ্রীসের কবি।
*
সেদিন যেন মনে হল
আলোয় ভুবন ভরা,
পথটা যেন বদলে গেছে
বদলে গেছি মোরা।
ইতিহাসের পাতা যেন
হঠাৎ এল উড়ে,
তাল মিলিয়ে সময়টাও
বসল আসন জুড়ে।
সাদর সাজের বাহারেতে
স্তব্ধ পথের লোক,
আগুন ঝরা রূপের ছটায়
ঝলসে গেল চোখ।
ট্রয়ের প্রাসাদ পিছে ফেলে
রাঙিয়েছ এই পথ,
বান্দা আমি সেথায় হাজির
সাজিয়ে প্রেমের রথ।
আরবি ঘোড়া ছুটবে কষে
তোমায় নিয়ে সওয়ার,
পিষ্ট হবে পাতক যত
তামাম দুনিয়ার।
চালক হয়ে ছুটব আমি
তোমার পাশে বসে,
হাজার জোড়া ঈর্ষাকাতর
চোখ জ্বলবে রোষে।
আসবে ধেয়ে পিছন হতে
রক্ষী সেনাদল,
চারদিকেতে যাবে শোনা
ভীষণ কোলাহল।
বর্মে ঢাকা দেহ আমার
মাথায় শিরস্ত্রান,
হাতের খোলা তলোয়ারে
ঝরবে অনেক প্রাণ।
যুদ্ধ শেষে হারিয়ে যাব
কোন সুদূরের পার,
সেথায় শুধু থাকব দুজন,
থাকবে না কেউ আর।
থাকবে নাকো দুঃখ জ্বালা,
যুদ্ধ ভাবনা,
আকাশ বাতাস ভরে শুধুই
সুখের বাসনা।
থাকবে সেথায় পাহাড়, সাগর,
নদী বিচঞ্চল,
দিঘীভরা স্বচ্ছ জলে
ভাসবে কমলদল।
দুচোখ ভরে মিলে দুজন
দেখব সবুজ বন,
তারি মাঝে গড়ব মোরা
সাধের নিবসন।
বনের পশু থাকবে সাথে,
গাইবে পাখি গান,
তাদের মাঝে আনন্দেতে
ভরবে মোদের প্রাণ।
চাঁদনী রাতে আলোয় ভরা
সারা ভুবন যখন,
আকাশ তলে মিলব মোরা
মধুর মিলন তখন।
জন্ম নেবে ভোরের আলো
ভরিয়ে তোমার কোল,
সেই আলোতে জগৎজুড়ে
জাগবে কলরোল।
ভাবের ঘোরে তোমায় নিয়ে
স্বপ্ন এমন আঁকি,
রাঙিয়ে তুলি মনের রঙে
রয় না কোনো ফাঁকি।
*
দিন কেটে যায় এমনি করে
আসে নতুন দিন,
তোমার কথা ভেবে ভেবে
হই তোমাতে লীন।
সেদিন দেখি তোমার সাথে
নব্য যুবা এক,
মনটা কেমন মলিন হল,
কন্ঠ নির্বাক।
ক'দিন বাদেই তোমার হাতে
দেখি শাঁখের বেড়ি,
মনে হল তোমায় পেতে
কেউ ঢেলেছে কড়ি।
কাছে এসে সরস হেসে
চোখ ফিরিয়ে নাও,
বাবুর বাঁধা বাঁদী হয়ে
দখিন পানে যাও।
শুভ্রবসন, দেহের সুবাস
কাঙাল করে মন,
কাজ ভুলে সব তোমার কথাই
ভাবি সারাক্ষণ।
সেদিন হতে মরম ব্যথায়
সদাই বিবশ থাকি,
অন্ধকারার আগল পানে
দৃষ্টি মেলে রাখি।
আনমনা মন দিবানিশি
প্রতীক্ষাতে রয়,
আবার যদি হৃদয় জুড়ে
মুক্ত বাতাস বয়।
কল্পলোকে তোমায় নিয়ে
উথালপাথাল চলে,
মিলব আবার দুজনাতে
মনটা যেন বলে।
*
বৃষ্টিভেজা এক সকালে
তোমায় যখন দেখি,
মনটা যেন উঠল হয়ে
পাখনামেলা পাখি।
মনে হল মাঝ আকাশে
উড়ছি যেন আমি,
হাওয়ায় ভেসে আমার পাশে
আছ শুধুই তুমি।
বন্দিশালার আগল ভেঙে
মুক্ত সেথায় মোরা,
মুক্ত তুমি, মুক্ত আমি,
মুক্ত প্রেমের ধারা।
বাঁধনহারা আনন্দেতে
গাইছি মোরা গান-
বাঁচব মোরা বাঁচার মত
ফুটবে নতুন প্রাণ।
মাটির পরশ থেকে দূরে
বাঁধব মোরা ঘর,
মিলব এবার পরস্পরে,
থাকবনা আর পর।
গড়ব মোরা নতুন জীবন
উছল প্রাণের ছন্দে,
বাঁচব আবার নতুন করে
বাঁচার আনন্দে।
*
এসব কথা ভাবি যখন
ভাবতে লাগে বেশ,
জানি তবু পথের নেশা
পথেই হবে শেষ।
-রবি রায়
👨

আমি ভাস্কর-
তুমি রোদ্দুর,
আমি চন্দ্র-
তুমি জোছনা,
প্রিয়তমা, ছেড়ে যাওয়া
কখনো তো হবে না।
-রবি রায়

I am the Sun,
You are the sunlight,
I am the moon,
You're moonlighting,
Breaking up won't happen, dear.
-Rabi Roy
হাত বাড়ালেই তোমায় পাব
এমন যদি হতো 
কাছেই আছ দূরে তবু 
খাঁচার পাখির মত।
-রবি রায়
👤
যারে আমি খুঁজে বেড়াই
পাইনা কেন তারে?
যারে আমি চিহিনা
তবু পিছু নাহি ছাড়ে!
-রবি রায়

👨
Composition: Rabi Roy 
It will resist, too. 
And although it blooms, there will be no form-juice-smell. 
You would think this is a flower- 
Formless-tasteless-odorless.





ষৌবনের দিশারি দিলারা রহমানকে:

মুছে যাওয়া দিনগুলো কেন জানি স্মৃতি হয়ে ফিরে আসে বারবার,


এখন রাত্রি,
অন্ধকার ঘনঘোর,
চারিদিকে হিংস্র শ্বাপদের গর্জন,
মৃত্যুর মলিন ছায়ায় ঢাকা
এখন জীবনের স্পন্দন

এখন রাত্রি,
অমানিশার অন্ধকারে
নিঃসঙ্গ পথিক আমি
চলেছি আলোর সন্ধানে
জীবনের সীমানা পেরিয়ে
দূরে কোন চিতায় চেতনা জ্বলা
শ্মশানের আলো
হাতছানি দেয়,
ও পথ আমার নয়,
আমি সূর্যসন্ধানী

যদিও রাত্রি, তবু জানি
এ আঁধার কেটে যাবে কোনো ক্ষণে,
দিগন্ত রক্তিম হবে নতুন ভোরের আলোয়,
আমি তারই প্রতীক্ষায়---
উদ্ভাসিত, দীপ্তিমান সূর্যের সন্ধানে
-রবি 

👤
শিয়রে শমন নিয়ে শুয়ে আছি আমি,
জীর্ন দেহ হতে বীর্য গেছে ঝরে,
অশক্ত হাতে ঝলকায় না আর খোলা তলোয়ার,
ভেঙে গেছে মন মোর ভণ্ডদের ভীড়ে,
দৃষ্টি ঝলসে ক্ষীণ চাঁদির ঝলকে,
চেতনায় ধরেছে চীড়.
অস্তিত্বে সঙ্কট,
বিভীষিকা তাড়া করে সারা দিনরাত

আঁধারে যোগায় আলো চিতার আগুন,
হিমশীতল এসময় উষ্ণ শুধুই শ্মশান
-রবি


👨

বিনিদ্র কত রাত কাটে বেদনায়,
একা বসে ক্যানভাসে আঁকি এ সময়,
ভাসাভাসা আশা নিয়ে পেতে রাখি কান,
পাই যদি কোনো ক্ষণে প্রাণের সন্ধান,
ক্ষুদে হাতে শিশু এক মারে যদি ঢেলা
কাঁচের কেল্লা হবে ভেঙে খানখান।
-রবি
(মার্চ ১, ২০০২)

👨
আমি স্বপ্নের সদাগর

আমি স্বপ্নের সদাগর,
স্বপ্ন দেখি, স্বপ্ন দেখাই,
স্বপ্নসাগরে ভাসি সদাই,
স্বপ্ন পুষি মনের মণিকোঠায়।

তিলে তিলে স্বপ্ন গড়ি আপন মনের সুখে,
ফিরি করি তাদের কাছে যারা আছে দুখে,
অসম্ভবের সম্ভাবনার ফোটাই কুঁড়ি মনে,
দিন বদলের বাতি জ্বালাই আঁধার ঘরের কোণে।
-রবি

👨

জীবন তো নেই আর বাকি,
পড়তে পড়তে তাই বইয়ের পাতায় পাতায়
দিনভর কত কিছুই না লিখে রাখি,
দিনশেষে অবশেষে ক্লান্ত চোখে
বইয়ের পাতার ভাঁজে ভাঁজে
নিজ হাতে লেখা ইতিহাস খুঁজে খুঁজে দেখি।

ইচ্ছে হয় ঝলমলে এক সকালে
আবার জন্ম নিই,
আলোর আভা গায়ে মেখে
শুরু করি নতুন দিন,
শুরু করি পথ চলা নতুন উদ্যমে
এ দেশ আবার আঠারোয় ভরে যাক,
আমাদের দিন শেষ হোক,
ওরাই ভাঙবে নীরবতা,
নীরবরা বন্দি হোক।
-রবি

👤
ইচ্ছে হয় আবার আঠারো ফিরে পেতে,
বিশাল এ বিশ্বের পথে তোমার হাত ধরে
ইচ্ছে হয় পথ হারাই,
ইস্তাম্বুল থেকে ইতালি,
প্যারী থেকে পিটসবুর্গ,
সাহারা থেকে সাইবেরিয়া তোমার সাথে ছুটে বেড়াই।
ইচ্ছে হয় তোমায় নিয়ে ডুব দিই শান্ত আরব সাগরে,
মাছেদের সাথে জলকেলি সেরে ভেসে উঠি হিমশীতল অতলান্তিকে।
ইচ্ছে হয় শ্রাবণ ধারায় দুজনে মিলে সিক্ত হই,
শরতের হিমেল বাতাসে গা ভাসাই,
বসন্তে নতুন পাতা গজানো গাছগাছালির ফাঁকে ফাঁকে
তোমার সাথে লুকোচুরি খেলি।
ইচ্ছে হয় গহিন বনে যাই,
তুলে আনি হলুদবরণ ফুল,
তোমাকে সাজাই,
গাঁয়ের পথে তোমার সাথে বাউল হয়ে ফিরি।
ইচ্ছে হয় দূর আকাশে ডানা মেলে তোমার সাথে উড়ি,
উড়তে উড়তে ঢেউ গুনি নীল সাগরের,
কিম্বা চলে যাই হিমালয়ের কোন ধবল গিরি চূড়ায়,
নিঃসিম নৈঃশব্দ্যের মাঝে
তোমার কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে
জীবনের গান গাই।
-রবি

একা একা অলিগলি
ধীরে ধীরে হেঁটে চলি,
নেই কোনো ভুবনের ভার,
মুছে যাওয়া দিনগুলো
স্মৃতি হয়ে এলোমেলো
পিছু থেকে ডাকে না তো আর।
-রবি

👤
আমার কলমে ভরা আছে ঘুমিয়ে থাকা গরল,
সুযোগ পেলেই ঘটে তার অসংযত নির্গমন।
তাই সচেতন ভাবেই তাকে নিষ্ক্রিয় রাখতে সচেষ্ট থাকি।
যা বেরিয়ে আসতে চায়,
ভিসুভিয়াস থেকে নির্গত তরল লাভার মত উষ্ণ তা।
কলম যখন সচল হয়-
সে চলে তার নিজের মর্জিমাফিক।
তার সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় বিচার বোধের সামনে দাঁড়িয়ে আমার শিরদাঁড়ায় তখন শীতলতার স্পর্শ।
নিজের অস্তিত্বের বিপন্নতা অনুভব করে শিউরে উঠি।
---
কলমে: রবি রায়

👤
ইচ্ছে করে যাই সেখানে
ভোরের পাখি গায় যেখানে
মিষ্টি সুরে গান,
পথটা ফেরার হারিয়ে ফেলি
ঘাসের উপর হেঁটেই চলি,
আসুক ধেয়ে অন্তরেতে
আনন্দেরি বান।
---
কলম: রবি রায়

একা কন্যে
রবি রায়
---
বাবার বাড়ি বারুইপুর
আর মায়ের বাড়ি ময়না,
বছর কয়েক কারো সাথে
কেউ কথাটি কয়না।
বছর দশের মেয়েটাকে
সঁপে মামার হাতে
মা-বাপেতে বছরভর
নিজের কাজে মাতে।
মা মেতেছে সমাজসেবায়
দূরের গোয়ালঘাটে,
বাপটি তার ব্যস্ত সদাই
বারুইপুরের হাটে।
কন্যে তাদের ঘুমের ঘোরে
মা-বাপকে খোঁজে,
মামা-মামি কান্না থামায়
ভুলিয়ে কথার ভাঁজে।

সমাজসেবা-হাটবাজারী
বন্ধ হলো সেদিন,
মেয়ের শব নিয়ে যাওয়ার
শমন এল যেদিন।
মনের দহন প্রাণ নিয়েছে,
চিকিৎসকের রায়,
মামা-মামি জানে শুধু
এ হনন বৈ তো নয়।
---
০২/০৮/২০২১












👨
হৃদ মাঝারে সিঁধ কেটেছে সুন্দরী সে নারী,
পরাণটা যার সোনায় মোড়া, 
লেখনীতে তার ঝর্না ধারা, 
মনটা বড় মায়ায় ভরা- 
আমি কি তারে আসন দিতে নারি? 

👨

 My Heart Is Trembling! 

 A Poem by Rabi Roy


My heart is cut in the middle by her- 
She is a beautiful woman. 
Her heart is wrapped in gold, 
Her fountain style in writing, 
The mind is full of illusions-

Can't I give her a seat in my mind?

👨


চেনা অচেনার ঘোরে
চেনা পথে খুঁজতে হয়না পথ,
চেনা মুখের দেখা পেলে স্বস্তি মেলে,
চেনা কণ্ঠের মিললে সাড়া,
চেনা সুর বাজলে কানে,
চেনা ছন্দে চললে জীবন
মনে সুখের ছোঁওয়া লাগে।
তবু এই চেনা বৃত্তে একদিন
বেঁচে থাকা মনে হয় অর্থহীন।
চেনা বিছানাটা যেন কাঁটা হয়ে বেঁধে,
মন করে আনাগোনা
কখনও মরুঝড়ে সাহারায়,
কখনোবা তুষারপাতে বিদ্ধস্ত সাইবেরিয়ায়,
খাইবারপাস হয়ে কখনোবা মন
হয়ে যায় নিরুদ্দেশ বাবরের দেশে,
ফাহিয়েন হিউয়েন ৎসাঙ মগজে পাকায় গোলমাল,
রামনাথের রথের চাকা পাক খায় মনে বারেবারে,
চেনা মুখের, চেনা সুখের পরিসর ছেড়ে,
মন হয়ে ওঠে ভরপুর ভবঘুরে।
ঠিকানাবিহীন মন
দুনিয়া জুড়ে ঘুরতে থাকে বনবন,
মাঝে মাঝে কখনো উঁকি দেয়
আল্পস্ কিমবা হিমালয়,
পদে পদে বিপদে ভরা এইসব দুর্গম পর্বত,
ঝঞ্ঝায় উত্তাল মাঝ সমুদ্দুর,
উত্তাল সাগরের সফেন সলিল
আর তেপান্তরের মাঠে সহসা হাজির সাইক্লোন
টানে মন,
কান পেতে কখনোবা শোনে মন
ভূস্বর্গে অবিরাম কামানের গর্জন,
বাদশাহী প্রাসাদের ধ্বংসস্তুপে
অশরীরি আরবি রমনীর প্রেমে মগ্ন মন
হয়তবা তৃপ্ত হয় ক্ষণিকের তরে,
ধীরে ধীরে তলিয়ে যাওয়া টাইটানিকে
কখনোবা আরোহী মন
মাতাল হয় মরণ মায়ায়,
পথের পাশে দাঁড়িয়ে দেখা
অচেনা মুখের মিছিলে অজান্তে
শামিল মন,
কখন যেন তাতে কদম মেলায়
আনমনা মন,
খোলা আকাশের নিচে
গ্রাম থেকে তুলে আনা মাঠভরা কালো কালো মানুষের ভীড়ে
কখনোবা মিলে গিয়ে অনুভবে মেলে
না পাওয়া সুখের সন্ধান।
অচেনা এ দুনিয়ায় প্রবেশ অবাধ,
হাতছানি দেয় অবারিত দ্বার,
সেথা হারিয়ে যেতে নেই মানা।
চেনা অচেনার এমনতর দ্বন্দ্বে
কেটে যায় দিন।
চেনা অচেনার ঘোরে দহনে লিপ্ত মন,
মাঝে মাঝে জেগে ওঠে সুপ্ত নয়ন,
চেনা মুখ মাঝে মাঝে কেমন যেন অচেনা হয়ে যায়,
ছায়া পড়ে তাতে মনের কোণে যতনে লুকানো কালিমা,
মধুমাখা চেনা স্বর
মনে হয় কর্কশ,
চেনা স্বরে যেন বিষধর সর্পের হিসহিস ধ্বনি,
স্বার্থের বিষে জ্বলে কর্ণকুহর,
সহসা হারিয়ে যায় কোনো কাছের হৃদয়,
কালকে যা ছিল চেনা -
আজ যেন বড়ই অচেনা দেখায়,
পথের কিনারে তাই কখনোবা থমকে দাঁড়ায়
সচল হৃদয় এক মেলাতে হিসেব।
চেনা জানা যতকিছু ছেড়ে মন
পালিয়ে বেড়ায় হেথাহোথা যখন তথন,
নাজানা কিসের যেন খোঁজে চেনা বৃত্তের বাইরে
মাঝে মাঝে ছুটে যায় মন,
তবু তাকে সামলে রাখে
যেন কিসের আকর্ষণ।
অবিরত এই দ্বন্দ্বই বুঝিবা জীবন
যা সাগরে ডুব দেয় মুক্তের খোঁজে
আবার ডুবতে ডুবতে আঁকড়ে ধরে খড়কুটো,
মধ্যরাতের আঁধারের মোহে কখনোবা বিবশ হয়,
থাকে তবু নব সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষায়।
-রবি রায়

👨

খিদে

আচ্ছা বলো তো তোমার কি খিদে পায়?
হা হা হা হা...

এক পাকশালার পাশেই আমার শয়নকক্ষ,
তাই ঘ্রাণে অর্ধভোজন হয়েই যায়,
বাকিটা পুষিয়ে নিই আনমনে পথচললার সময়ে দৃষ্টির মাধ্যমে।

কবি বলেই তো খিদে আমার একটু বেশি পায়, মনের খিদে,
সে খিদে পুরনে কেউ ঘেঁসেনা তেমন আমার কাছে
যারা আছে আমার আশেপাশে,
সদাই জ্বলে দাউ দাউ করে আমার মনের উদর তাই!

যেদিক পানেই চাই
দেখি মনের মানুষ নাই।
-রবি রায়
29/10/20222

👨

বৃষ্টি ভেজা দিনে


আজ দোতলা বাড়ির বারান্দায়
দাঁড়িয়ে থেকে বৃষ্টি দেখার দিন,
আজ চৌরঙ্গী মোড়ে
ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে থাকার দিন,
আজ নদীর পাড়ে প্রিয়ার সাথে
সঙ্গোপনে মিলনের দিন
আজ মিছিলে পা মেলাতে
মহানগরে ছুটে যাবার দিন,
এক পাতেতে ভাগ করে খাবার দিন,
তাদের চোখে দুনিয়া দেখার দিন
আজ নিজের খাবার পরের সাথে
এক পাতেতে ভাগ করে খাবার দিন,
আজ ঘর হারাদের পাশে দাঁড়িয়ে
তাদের চোখে দুনিয়া দেখার দিন

আজ মুচকি হেসে খোস মেজাজে
প্রাণের দহন লিখে রাখার দিন,
কাব্য করার দিন,
বেহুঁশ হওয়ার দিন

রোমন্থনের দিন,
আজ এতকালের প্রাণের সখা বইগুলো সব
বিলিয়ে দিয়ে 'বিদায়' বলার দিন,
আজ 'তোমারা সবাই ভালো থেকো'
জানিয়ে দেওয়ার দিন।



বনফুল 

যে ফুল ফোটে বনে, 
তাকে কি কখনো কেউ ক্ষণিকের তরে 
সাজাতে শহিদবেদি 
ভুলেও তুলে আনে আপন মনে?
~রবি রায়


অসংলগ্ন কাব্য

রবি রায়

মুগ্ধ বিষ্ময়ে আমি বারে বারে দেখেছি তোমায়,
মথিত হয়েছি বারে বারে তোমার স্বর্ণকন্ঠের সুষমায়।
তোমার মধুর সান্নিধ্য, তোমার স্নিগ্ধ পেলব পরশ
তৃষিত হৃদয়ে তোলে হিলোল,
তোমার কমনীয় নয়ন শোভায় বিবশ হয় মন।
তুমি যেন মনে হয় এক দীপশিখা অনির্বাণ-
অনুজ্জ্বল দীপ্তি বিলায়ে দূর কর যত অন্ধকার,
সীমার মাঝে অসীম হয়ে নিয়েছ যেন এই ভুবনের ভার।
শীর্ণ বক্ষে সযত্নে শোভিত তোমার হৃদয়কুঞ্জখানি
হাতছানি দেয়,
অবসন্ন মন মোর খুঁজে পায় যেন শান্তির একখানি নীড়।
এত কাছে তবু তুমি দূরে... বহুদূরে,
তুমি যেন কোন এক স্বপ্নের মরুদ্যান।
                         ***








অসহায় দৃষ্টিতে ফিরে দেখি বারবার-
যুদ্ধবিধ্বস্ত আজো পৃথিবী,
চারিদিকে কামানের অবিরত গর্জন
আর আর্ত মানুষের বুকফাটা ক্রন্দন।
দেশভেদে কাল ভেদে
এ বিলাপের নেই কোন আলাদা সরগম্।
কামানের নেই কোন বর্ণ
কামান মানে না কোন ধর্ম,
কামান মানে না কোন বাদ-ও,
বাদাবাদি দেখি যতই কিতাবে।
মানুষ ও কামান-
সম্পর্ক শুধুই খাদ্য ও খাদকের।
তাই কসোভো থেকে কারগিল-
স্বজন হারানোর হাহাকার
আর লাশের মিছিল।
পোড়া মাংসের গন্ধ খুসবু ছড়ায়
খাসোগির খাস কামরায়,
শকুনের ঝাঁক মহানন্দে সারে পরব,
যুদ্ধবাজ নাটা জার্মানটা
ফিরে আসে দেবদূত সেজে,
লুঠ করে যুবতীর প্রেম।
এখানে এখন
জননী সন্তান বিকোয় ক্ষুধার জ্বালায়,
শিশুকন্যা শিকার হয় আদিম লালসার,
ভান্ডারে মজুদ খাদ্য-
ফুটপাতে বুভুক্ষু শিশুর ক্রন্দন,
কর্মহীন হাত কর্মব্যস্ত হয় নিজেরই গলায়,
তারুণ্য বিকিয়ে যায় ধর্মের হাটে,
কাব্যে বিদ্রোহের দায়ে নির্বাসিত হয় নারী,
মানবতা মুক্তি খোঁজে কাতর আর্তনাদে।
হিংস্র হায়েনার দল
হিরোশিমা নাগাসাকির মহাভোজ শেষে
দুনিয়া দাপিয়ে বেড়ায়
নিত্যনতুন শিকারের খোঁজে
আর সুন্দরীরা উদোম নাচে
শান্তির সঙ সেজে।

শিউরে ওঠে হৃদয়,
এ কোন জাহান্নামে 
রেখে যাব একাকী তোমায়!

(অসমাপ্ত)

No comments:

Post a Comment