LinkedIn

Monday, 28 April 2025

Vietnam War ll Turning Point

History of Vietnam War



বিশ্ববিবেককে কাঁপিয়েছিল যে ছবিঃ

১৯৭২ সালের ৮ই জুন। ভিয়েতনাম যুদ্ধে নাপাম বোমার আগুনে জ্বলছে Trang Bang গ্রাম। আগুনে দগ্ধ নয় বছরের নগ্ন বালিকা Kim Phúc (ফুক) ও আতঙ্কিত কিছু শিশু জীবন বাঁচাতে দৌড়ছে। উল্লিখিত ছবিটি তুলেছিলেন Associate Press-এর ফটোগ্রাফার Nick Ut। তিনি এই ছবিটির জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন। নাপামের আগুনে দগ্ধ ও আতঙ্কগ্রস্থ কিম ফুকের নগ্ন ছবিটি ভিয়েতনাম যুদ্ধ তথা ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে আগুনে ঘৃতাহুতির মত কাজ করেছিল।

🦋

ভিয়েতনাম যুদ্ধ (১৯৫৯-৭৫): 
ওরভিয়েতনাম চীন ও জাপানের পর ফ্রান্সের অধীনে ছিল। ১৯৫৪ সালে জেনেভা চুক্তির আওতায় কমিউনিস্ট ও জাতীয়তাবাদীদের দাবীর মুখে সাময়িকভাবে ভিয়েতনামকে উত্তর ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ ভিয়েতনামে বিভক্ত করা হয়। ১৯৫৭ সালে উত্তর ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট গেরিলারা National Liberation Font for South Vietnam-র (ভিয়েতকং) অধীনে সংগঠিত হয়ে দক্ষিণ ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্র কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে এ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। কমিউনিস্ট উত্তর ভিয়েতনামকে সাহায্য ও সহযোগিতা করেছিল চীন ও সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৬৮ সালে নিক্সন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ভিয়েতনামে যুক্তরাষ্ট্রের নৃশংসতা বেড়ে যায়। যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, যুদ্ধবিরোধী মার্কিন জনমত, মাই লাই হত্যাকান্ডের নৃশংসতা, বিশ্বব্যাপী মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ-নিন্দা ইত্যাদি কারণে আমেরিকানদের আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ১৯৭৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ যুদ্ধে চরম মূল্য দিয়ে পর্যুদস্ত হয়ে দেশে ফিরে যায় এবং পরে দক্ষিণ ভিয়েতনামী সৈন্যরা উত্তর ভিয়েতনামের কাছে বিনাশর্তে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৭৬ সালে কমিউনিস্ট সরকার উভয় ভিয়েতনামকে একত্রিত করে। যুদ্ধে আমেরিকার নিহতের সংখ্যা ৫৮,০০০ ও আহতের সংখ্যা ৩,০৪,০০০। উত্তর ভিয়েতনামের নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ। 
🦋

ট্রাং বাং সায়গনের চল্লিশ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত একটি গ্রাম। ভিয়েতনামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর সায়গন ও নমপেনের সংযোগকারী একমাত্র সড়ক "রুট ওয়ান" গেছে এই গ্রামের মধ্য দিয়ে। উত্তর ভিয়েতনামী সৈন্য ও কম্যুনিস্ট গেরিলারা গ্রামটি দখল করে সড়কটি বন্ধ করে দেয়। দঃ ভিয়েতনামী সৈন্যরা সড়কটি মুক্ত করতে ট্রাং বাং গ্রামের আশেপাশে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে। কয়েকদিন ধরে মাঝেমধ্যে দুই একটা গুলির শব্দ শোনা গেলেও যুদ্ধের তেমন একটা আলামত দেখা গেল না। যুদ্ধের খবর পেয়ে সেখানে জড়ো হয়েছিল নিক ওটসহ দেশবিদেশের কিছু সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফার। গ্রামটির অনেক লোক ইতিমধ্যে অন্যত্র চলে গেলেও কিছু লোক রয়ে গেল। তাদের ধারণা এখানে যুদ্ধ হবে না। কারণ কমুনিস্ট গেরিলারা গ্রামটি ছেড়ে চলে গেছে। দুপুরের দিকে দঃ ভিয়েতনামী সৈন্যদের কমান্ডার অতিরিক্ত সাহায্যের জন্য Bien Hoa Airforce Base-এ বার্তা পাঠালেন। সাংবাদিকেরা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়ে গ্রামটির দিকে নজর রাখলেন। যে কোন মুহুর্তে গেরিলারা পাল্টা আক্রমণ করতে পারে। দঃ ভিয়েতনামী সৈন্যরা গ্রামটির দিকে কয়েকটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করল। সেগুলো বিষ্ফোরিত হয়ে বাতাসে হলুদ বর্ণের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ল। গ্রেনেডের শব্দ শোনে ভাইবোনসহ কিম ফুক ও তার কাজিনরা গ্রামের একমাত্র প্যাগোডাতে আশ্রয় নিল। কয়েক মিনিট পর দু'টি এয়ারক্রাফট উড়ে এসে প্যাগোডার পাশে বোমা ফেলল। এরপরও কোন গেরিলাকে পাল্টা আক্রমণ করতে বা পালিয়ে যেতে দেখা গেল না। এয়ারক্রাপ্টগুলো আরেকটা চক্কর মেরে এসে একই জায়গায় আবারো বোমা ফেলল। তবে এবারের বোমাগুলো দেখতে বড় বড় ড্রামের মত। এগুলো ছিল নাপাম বোমা। চোখের পলকে পুরো গ্রামটি একটি অগ্নিকুন্ডে পরিণত হল। কিম ফুকের শরীরে আগুন ধরে গেলে সে জামাকাপড় টেনে ফেলে দিল। নাপামের আগুনে তখন তার শরীর ঝলসে গেছে। যন্ত্রনায় চিৎকার করে সে ও অন্যান্য সবাই রাস্তার দিকে দৌঁড়তে লাগল। দঃ ভিয়েতনামী সৈন্য ও সাংবাদিকেরা হতভম্ব হয়ে দেখতে লাগলেন, জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ড থেকে দগ্ধ-অর্ধদগ্ধ মানুষের গগনবিদারী চিৎকার, দিগ্বিদিক ছুটাছুটি এবং জীবন বাঁচানোর শেষ প্রচেষ্টার বীভৎস দৃশ্য! বিশ্ব কাঁপানো ছবিটি ছিল নিক ওটের তোলা এইসব বিভৎস দৃশ্যেরই একটি। ওট যখন কিম ফুককে সাহায্য করতে এগিয়ে গেলেন তখন সে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে আর চিৎকার করছে "Nong qua, Nong qua" (খুব গরম, খুব গরম)। সেই মুহুর্তে সাংবাদিকরা তাঁদের কাছে পান করার যে পানিটুকু ছিল তা ফুকের শরীরে ঢেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না।
*লেখাটি সংগৃহীত 

ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিখ্যাত এই ছবি
মানবতাবিরোধী অপরাধের নজির স্থাপন করেছে 

On April 28, 1967 Muhammad Ali refused to be drafted to fight
in Vietnam.

“I have nothing to lose by standing up for my beliefs. So I'll go to jail, so what? We've been in jail for 400 years.”


No comments:

Post a Comment